বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকসেবীরা মাদক ক্রয় ও সেবনের জন্য হিলিতে আসে

ষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান,বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিলির সাতকুড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনের দায়ে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকসেবীরা মাদক ক্রয় ও সেবনের জন্য হিলিতে আসে

সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় হিলিতে মাদক অনেক সহজলভ্য। এ কারণে দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকসেবীরা মাদক ক্রয় ও সেবনের জন্য হিলিতে আসে।    পুলিশ হিলিকে মাদকমুক্ত করতে স্থানীয় যুবসমাজ ও মাদকনির্মূল কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে। এর অংশ হিসেবে হিলিতে মাদক সেবন করতে এসে আটকদের শাস্তি স্বরূপ নিজস্ব ফেসবুক লাইভ করতে হচ্ছে। তাদের দিয়ে ফেসবুক লাইভে মাদক নেওয়ার অপকারিতা বর্ণনা করাসহ মাদক না নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করানো হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান,বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিলির সাতকুড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনের দায়ে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিলি সীমান্তের সাতকুড়ি এলাকায় স্থানীয় যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষকে নিয়ে পুলিশ মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় মাদকসেবনের দায়ে বিভিন্ন স্পট থেকে ১১ জনকে আটক করে পুলিশ। তারা সবাই ফেসবুকে লাইভে এসে আর কখনও মাদকগ্রহণ না করার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

 

আটকরা হলো, মাসুদ বিল্লাহ,  তুহিন,  আব্দুল্লাহ্,  আব্দুর রহমান,  আব্দুল খালেক,  রায়হান কবির,  সামছু মিয়া, রহমান সরকার,  ফরিদ মিয়া,  স্বপন তালুকদার এবং রফিকুল।

তারা সবাই গাইবান্ধা ও রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে কেউ শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ছাত্র ও সাংবাদিক ছিলেন।

তাদের মধ্যে সামছু মিয়া নামের একজন ফেসবুক লাইভে এসে বলেন,‘আমি সামছু মিয়া আমার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। আমি দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুরের হিলিতে এসে বিভিন্ন ধরনের মাদক নেই। রবিবার সন্ধ্যায় হিলির সাতকুড়িতে মাদক নিতে এসে এলাকাবাসী এবং পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি। মাদক নেওয়া অপরাধ এবং ক্ষতিকর। আমি আর কখনও মাদক নেবো না। আপনারা কেউ কখনও মাদক নেবেন না। সেই সঙ্গে কেউ হিলিতে মাদক নিতে আসবেন না। আসলে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে নিজেকে এভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক লাইভ করতে হবে।’

 

এভাবেই পরপর তিনজন লাইভে এসে একই কথা বলেন এবং প্রতিজ্ঞা করে। অন্যরাও বাকি তিনজনের ফেসবুক থেকে লাইভে গিয়ে ভবিষ্যতে মাদক না নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।

হাকিমপুর (হিলি) সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আখিউল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিকভাবে দমন করা না গেলে কখনই মাদক দমন করা সম্ভব না। অনেক মাদকসেবীর পরিবার, প্রতিবেশী ও সহকর্মী জানেন না যে তাদের খুব কাছের লোকটি একজন মাদকসেবী। এর ফলে ওই মাদকসেবীকে ঘৃণা বা প্রতিরোধে ব্যবস্থাও নিতে পারেন না। ফেসবুক লাইভে এসে মাদকসেবীদের প্রতিজ্ঞা করানোটা একটি সামাজিক প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

তিনি আরও জানান, এখানে যোগদানের পর থেকেই তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছেন। তাই নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। আটক মাদকসেবীদের ফেসবুক লাইভ হওয়ার ফলে হিলিতে তাদের আনাগোনা কমাবে। তেমনি মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে একটা সামাজিক আন্দোলনও গড়ে উঠবে।